আর কয়েকদিন পরই কুরবানির ইদ। এ উৎসবের মূল আনন্দ ভাগাভাগির মধ্যেই। তবে এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে ব্যস্ততা, বিশেষ করে ঈদের প্রথম দু-তিন দিন। মাংস কাটা, বণ্টন, সংরক্ষণ ও রান্না সব মিলিয়ে রান্নাঘরের ব্যস্ততা থাকে তুঙ্গে। তাই কুরবানির আগেই কিছু প্রস্তুতি নিয়ে রাখলে ঈদের দিনগুলো সহজ ও সুন্দরভাবে কাটে।
রান্নাঘরের প্রস্তুতি
মসলাপাতি গুছিয়ে ফেলুন আগেই: কুরবানির মাংস দিয়ে কোরমা, রেজালা, ভুনা, কালাভুনা ইত্যাদি পদ তৈরি হয়। এসব রান্নায় প্রয়োজন প্রচুর পরিমাণে পেঁয়াজ, আদা, রসুন, জিরা ও অন্যান্য মসলা।
আগে থেকেই এই উপকরণ কেটে, বেটে বা ব্লেন্ড করে এয়ার টাইট বক্সে রেখে দিন। বাটানো মসলা বরফ বানিয়ে কিউব করে জিপ-লক ব্যাগে সংরক্ষণ করলে পরে কষ্ট কম হবে।
গরম মসলা ও শুকনা মসলাও তৈরি রাখুন: এলাচ, দারুচিনি, লবঙ্গ ইত্যাদি শুকনা মসলা কিনে হাতের কাছে রাখুন। চাইলে আগে থেকেই গুঁড়া করে রাখতে পারেন।
রান্নার সরঞ্জাম ধারালো করে রাখুন: দা, ছুরি, বটি আগেই ধার করিয়ে রাখুন। এতে কাজ দ্রুত হবে। তবে এসব যন্ত্রপাতি শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন।
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও জীবাণুনাশক ব্যবস্থাপনা
কুরবানির সময় সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে স্বাস্থ্য ও পরিচ্ছন্নতায়। কারণ এই সময় রক্ত, চর্বি ও বর্জ্য পদার্থে চারপাশ নোংরা হয়ে পড়তে পারে।
ব্লিচিং পাউডার ব্যবহার করুন: পশু কোরবানির পর রক্ত পরিষ্কার করতে জায়গায় জায়গায় ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে দিন। এতে দুর্গন্ধ কমে এবং জীবাণুর বিস্তার রোধ হয়।
লিকুইড অ্যান্টিসেপটিক মজুদ রাখুন: Dettol বা Savlon-এর মতো জীবাণুনাশক ব্যবহার করে ঘরের মেঝে ও রান্নাঘর নিয়মিত মুছে ফেলুন।
হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও হ্যান্ডওয়াশ: রান্নার আগে ও পরে, পশুর মাংস স্পর্শের পর ভালোভাবে হাত ধোয়ার অভ্যাস রাখুন। হ্যান্ড স্যানিটাইজার পাশে রাখলে দ্রুত হাত জীবাণুমুক্ত করা সহজ হয়।
পলিব্যাগ ও জিপ-লক ব্যাগ প্রস্তুত রাখুন: মাংস সংরক্ষণের জন্য ভালো মানের পলিব্যাগ ও ছোট বড় জিপ-লক ব্যাগ রাখুন। এতে ফ্রিজে মাংস রাখা সহজ হবে এবং দুর্গন্ধও কমবে।
ফ্রিজ ব্যবস্থাপনা
ঈদের আগে ফ্রিজ পরিষ্কার করে খালি রাখুন। পুরোনো অব্যবহৃত খাবার ফেলে দিন। প্রয়োজন হলে ফ্রিজে গন্ধ দূর করতে লেবু কাটা বা কাঠকয়লা রেখে দিতে পারেন।
ছোট কিন্তু দরকারি টিপস
রান্নাঘরে একজোড়া রবার গ্লাভস রাখুন মাংস কাটার সময় কাজে লাগবে।
কিছু বড় সাইজের ট্রে বা বেসিন প্রস্তুত রাখুন মাংস ধোয়া ও আলাদা করতে সুবিধা হবে।
শুকনো কাপড়, টিস্যু ও টাওয়েল মজুদ করে রাখুন রান্না ও পরিষ্কারের সময় এগুলো দরকার হয়।
ঈদের ব্যস্ততায় যেন স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা অবহেলা না হয়। আগে থেকে কিছু প্রস্তুতি নিয়ে রাখলেই কুরবানির দিনটি হয়ে উঠবে আরও আনন্দময় ও ঝামেলামুক্ত।
খুলনা গেজেট/এনএম